শেয়ার বাছাই করা~~Hedaet Forum~~


Email: Password: Forgot Password?   Sign up
Are you Ads here? conduct: +8801913 364186

Forum Home >>> Business >>> শেয়ার বাছাই করা

Tamanna
Modarator Team
Total Post: 7639

From:
Registered: 2011-12-11
 

শেয়ার বাছাই করার আগে বিনিয়োগকারীদের জানতে হবে কোম্পানির অতীত ইতিহাস,
এর সঙ্গে কারা জড়িত,
তাদের ব্যবসায়িক সততা,
দক্ষতা,
কোম্পানি কি ধরনের পণ্য উৎপাদন করে,
সেগুলোর বাজার চাহিদা কেমন,
কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি কেমন,
ঋণ থাকলে মূলধনের কত অংশ,
কোম্পানির আয়-ব্যয়,
শেয়ারপ্রতি আয়,
শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ,
সম্পদের মূল্য,
বছর শেষে তারা কেমন লভ্যাংশ দেয়,
লভ্যাংশ দেওয়ার অতীত রেকর্ড এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সহজেই ভালো কোম্পানির শেয়ার বাছাই করা সম্ভব। কোন কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি কতো বেশি শক্তিশালী তা কোম্পানির আর্থিক বিবরণী দেখলেই বুঝা যাবে।
যে কোম্পানির শেয়ার কেনা হবে,
তার বর্তমান আয়,
বার্ষিক আয়,
কোম্পানি নতুন কোনো পরিবর্তন আসছে কি-না,
কোম্পানির পণ্য সরবরাহ কেমন,
নেতৃত্বে কারা আছেন,
কোম্পনির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশ গ্রহণ কেমন
এবং সবশেষে ওই কোম্পানির পণ্যের বাজারে চাহিদা কেমন,
বছর শেষে তারা কেমন লভ্যাংশ দিচ্ছে এসব বিষয় পর্যালোচনা করতে হবে।
যিনি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী তার প্রথম কাজ হবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর্থিক বিবরণ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নেওয়া। প্রতিটি কোম্পানি প্রতিবছর বার্ষিক আয়-ব্যয় সংবলিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন সংগ্রহ করে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে অব্যশই তাকে বাজারের কিছু টার্মস জানতে হবে।
যেমন- ইপিএস,
ইংরেজিতে এর বিশ্লেষণ হলো আর্নিং পার শেয়ার বা প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আয়।
ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ।
ডিভিডেন্ড ইয়েল্ড, প্
রাইস আর্নিং রেশিও,
নেট এসেট ভ্যালু। ভালো শেয়ারের অন্যতম একটি উপসর্গ হচ্ছে শেয়ার প্রতি আয় ভালো।
সাধারণত একটি শেয়ারের ইপিএসের ১০ গুণ বেশি পর্যন্ত তার বাজারমূল্য হতে পারে। এর বেশি হলে তাকে অতিমূল্যায়িত ধরা হয়। যেমন কোনো শেয়ারের ইপিএস ১০ টাকা হলে ওই শেয়ারের বাজারমূল্য ১০০ টাকা হতে পারে। এর বেশি হলে তা অতিমূল্যায়িত।
তবে সব ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। কোম্পানি বড় ধরনের সম্প্রসারণে গেলে,
মুনাফা ঘোষণার আগে,
রাইট বা বোনাস শেয়ার দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ব্যাকরণ মিলবে না।
নিট এসেট ভ্যালু এটি শেয়ার প্রতি কোম্পানির নিট সম্পদের মূল্য প্রদর্শন করে। শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ ভালো হলে এটি ভালো শেয়ার হিসেবেই ধরা হয়। শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই শেয়ারের মূল্য ও আয়ের অনুপাত দেখতে হবে। এদিকে বিক্রি করে নয়; কেনার সময়ই আপনাকে লাভ করতে হবে। কম দামে ভাল শেয়ার কিনতে না পারলে বিক্রি করে লাভ করা সম্ভব নয়। ব্যাক্তিগতভাবে ‘ডাউন মার্কেট’-ই হলো বিনিয়োগের সময়। কারণ, এ সময় ভাল মানের শেয়ার তুলনামূলকভাবে অনেক কম দামে কেনার সুযোগ পাওয়া যায়।

প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ফান্ডামেন্টাল আলোচনা করছি। বিনিয়োগকারী হিসেবে সময়ের সাথে সাথে আপনি যেমন অভিজ্ঞ হবেন, তেমনি এই চেক লিস্টও আপনার অভিজ্ঞতার সাথে সাথে বড় হবে। ভাল কোম্পানির শেয়ার কেনার প্রাথমিক চেকলিস্ট: প্রথমেই আপনার পছন্দের শেয়ারটির পি/ই দেখুন। এটা অবশ্যই ১৫ বা তার নিচে হওয়া উচিত। যত কম হবে ততই ভাল।
এবার এনএভি দেখুন। এনএভি’র সাথে বাজার মূল্যের সামঞ্জস্য থাকা উচিত। সাধারনত এনএভি ও শেয়ারের মূল্য অনুপাত এক হলে তা বিনিয়োগের জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। তবে আমাদের বাজারে এ অনুপাত ১.৫ থেকে ২ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। মানে ৩০ টাকা এনএভি হলে ঐ শেয়ারের জন্য ৬০ টাকা পর্যন্ত ক্রয় মূল্য নিরাপদ। কোম্পানির ইপিএস ও এনএভি এর অনুপাত নির্ণয় করুন। এ অনুপাত ১০ বা তার চাইতে যত বেশি হবে শেয়ারটি তত ভালো বলে বিবেচিত হবে। গত ৩/৪ বছরে কোম্পানির ইপিএস বা মোট লাভের পরিমাণ লক্ষ্য করুন।
ধারাবাহিক ভাবে ইপিএস বা মোট লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায়া ভাল কোম্পানির লক্ষণ।
মোট শেয়ারের সংখ্যা দেখুন। আর দেখুন তার কতটুকু পাবলিকের হাতে আছে।
নিয়মিত গ্রহণযোগ্য মাত্রায় লেনদেন হয় এমন শেয়ারই কেনা উচিত।
ছোট পেইড আপ ক্যাপিটাল এর শেয়ার তুলনামূলক ভাবে অতিমূল্যায়িত থাকে এবং এদের দাম অনেকে বেশি ফ্ল্যাকচ্যুয়েট করে।
তাই একজন নতুন অনভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী হিসেবে আপনি মধ্যম থেকে বড় মাপের পেইড আপ ক্যাপিটাল আছে এমন শেয়ারে বিনিয়োগ করুন। কারণ মাঝারী থেকে বড় মূলধনের (১৫০ কোটি বা তার ওপরের) স্টকগুলোর বাজার দর অনেক বেশি স্ট্যাবল থাকে। অথোরাইজড ক্যাপিটাল আর পেইড আপ ক্যাপিটাল’র অনুপাত দেখুন। যদি দুটি খুব কাছাকাছি হয় তবে ঐ কোম্পানি কখনই ডিভিডেন্ড হিসেবে বোনাস শেয়ার দেবে না। এ ধরনের শেয়ার থেকে আপনি শুধু ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাবেন।
গত ৩-৪ বছরের ট্র্যাক রেকর্ড দেখুন। কী পরিমাণ বোনাস দেয় তা দেখুন। নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয়া কোম্পানিগুলো তুলনামূলক ভাবে নিরাপদ।
গত ১/২ বছরের গড় মূল্য দেখুন। চেষ্টা করুন এ মূল্যের কাছাকাছি দামে শেয়াটি কিনতে।
ডিএসই’র সাইটে প্রকাশিত গত ৫-৬ মাসের কোম্পানি সংশ্লিষ্ট খবরগুলি দেখুন।
ডিএসই প্রতি ৪ মাস পর পর কোম্পানির আর্নিং রিপোর্ট দেয়। একটু বুঝে-শুনে হিসেব করলেই কোম্পানি বছর শেষে কি পরিমাণ লাভ করবে সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব।
কোম্পানির সুনাম ও এর পরিচালকদের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনা করুন। পরিচালকদের ব্যক্তিগত ইমেজ খারাপ হলে ঐ কোম্পানি ফান্ডামেন্টালি যত ভালই হোক তা এড়িয়ে চলুন।

কি ভাবে কিনবেন : ধরুন আপনি কোম্পানি ‘ক’ এর ১০০০ টি শেয়ার কিনতে চান। সাধারণত আমরা একবারেই সব শেয়ার কিনে ফেলি। আর এতে আমাদের লোকসানের ঝুঁকি অনেক অনেক বেড়ে যায়। বরং একবারে সব শেয়ার না কিনে ৩-৪ বারে কিনুন। এটা মাথায় রাখুন যে, আপনি কেনার পর পরই শেয়ারটির দাম পড়ে যেতে পারে। তাই ৩/৪ বারে কিনলে আপনার গড় ক্রয় মূল্য অন্যদের তুলনায় স্বাভাবিকভাবেই কম হবে। অর্থাৎ শুরুতেই আপনি অন্যদের চাইতে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকবেন; যা আপনার মুনাফা অর্জনের জন্য সহায়ক। এ স্ট্র্যাটেজিকে বলা হয় এভারেজিং টেকনিক। বিক্রির ক্ষেত্রেও একই ফর্মূলা অনুসরণ করুন।
সব শেয়ার একবারে বিক্রি না করে ২-৩ ধাপে বিক্রি করুন।

কতটুকু কিনবেন : এটা নির্ভর করে আপনার পোর্টফোলিওর ডিজাইন ও তার বর্তমান অবস্থার ওপর। সহজ কথায়, সব মূলধন একটি কোম্পানির স্টকে বিনিয়োগ নিরাপদ নয়। এ কারনে সব টাকা একটি সেক্টরের ৩/৪ টি শেয়ার বিনিয়োগ করাও অনুচিত। নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য প্রথমেই ২-৩ টি সেক্টর বাছাই করুন। এবার প্রতিটি সেক্টর থেকে ২-৪ টি কোম্পানির শেয়ার আপনার পোর্টফলিওতে রাখুন। কারন সব ডিম এক খাচায় রাখলে একটি দুর্ঘটনাই আপনার সব কিছু নষ্ট করে দিতে পারে। তাই কখনই সব মূলধন একটি শেয়ারে বা একটি সেক্টরের শেয়ার সমূহে বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকুন। লেখক: আহসান আমী
by net