Love~~Hedaet Forum~~


Email: Password: Forgot Password?   Sign up
Are you Ads here? conduct: +8801913 364186

Forum Home >>> Blogs, Variety >>> Love

Tamanna
Modarator Team
Total Post: 7639

From:
Registered: 2011-12-11
 

আপনি এভাবে তাঁকিয়ে আছেন
কেনো?
= আমি? আপনার
দিকে আমি তাঁকিয়েছি?
- জি আপনি। কেনো তাঁকাচ্ছেন
সেটা বলুন?
= আপনি এতো সুন্দর
করে শাড়ী পড়েছেন
তাই।
- তাঁকানোর অধিকার কোথায়
পেয়েছেন?
= আপনার কাছ থেকে।
- মানে?
= প্রতিদিন অফিসে এসেই আমার
ডেস্কের
সামনে একটা মুচকি হাঁসি কেনো
দেন?
- বলা যাবে না।
= হুম। তাহলে আমি তাঁকানোর
অধিকার কোথায়
পেয়েছি সেটাও বলা যাবে না।
- আপনি খুব প্যাঁচায় কথা বলেন
কেনো?
= একজনের
প্যাঁচে গেঁথে গেছি তাই।
- তাই?
= জী।
- ত এই প্যাঁচের রহস্য জানতে পারি?
= না।
- ও।
= আপনাকে একটা কথা বলি?
- হ্যাঁ বলুন।
= আজকে এই খয়েরী রঙ্গের
শাড়ীতে আপনাকে সুন্দর লাগছে।
- সত্যি?
= হ্যাঁ।
- যাই হোক শাড়ী পড়াটা স্বার্থক
হয়েছে।
= ঠিক বুঝলাম না।
- নাহ্ কিছুনা।
= ওহ।
- আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলি?
= হ্যাঁ বলুন।
- আপনাকে এই নীল
শার্টটাতে না ক্ষ্যাত
লাগে।
= আচ্ছা আর পড়বো না।
- হুম। আর এইভাবে মাথার চুল
চিরুনী করবেন না।
= আচ্ছা।
- ওকে। থাকেন লাঞ্চে কথা হবে।
= ওকে।
মৌমাতা আবিরের ডেস্ক
থেকে হেঁটে আসছে
আর একা একা খিট খিট করে হাঁসছে।
মৌমিতা ভাবছে...
- ছেলেটাকে সে দেড় বছর
থেকে দেখে আসছে,
একেবারে সাদাসিধে, একটু
বোকা টাইপের।
আমি যাই বলি তাই শোনে।
কাল থেকে হয়তবা আর নীল শার্ট
পড়বেনা,
মাথার চুল আজ
যেভাবে চিরুনী করেছিলো
সেভাবে করবেনা।
এই বোকা টাইপটার জন্যই
মৌমিতা আবিরকে পছন্দ করে।
আবির ও
যে মৌমিতাকে পছন্দ করে,
সেটা মৌমিতা অনেক আগেই টের
পেয়েছে।
কিন্তু মৌমিতা ইচ্ছে করেই
ব্যাপারটা না বুঝার ভান
করে যাচ্ছে।
কাছে আসতে যতটা না সময়
লাগে তার চেয়ে খুব
কম সময় লাগে দূরে চলে যেতে।
এতদিন
মৌমিতা আবিরকে জানতে
চেয়েছে,
বুঝতে চেয়েছে।
কারন, না বুঝে, না জেনে এই
সম্পর্কে জড়ালে কষ্টের
সীমা থাকবে না।
তবে আবির
যে মৌমিতাকে ছাড়া অন্য
কাউকে পছন্দ করেনা, ইতঃমধ্যেই
সেটা
মৌমিতার জানা হয়ে গেছে।
কারন,
আবিরকে দেখে আসছে দেড়বছর
থেকে সে।
আবির আর মৌমিতা দুজনই একই
অফিসে
জব করে। তবে মৌমিতা আবিরের
নীচের
পোষ্টে।
কয়েক মাস আগের কথা...
মৌমিতার
ডেস্কে তেইশটি রক্তগোলাপ
রাখা।
কারো সাহস নেই মৌমিতার
ডেস্কে এভাবে
ফুল রাখার। কারন
মৌমিতা অফিসে একটু
রাগি টাইপের।
তবে বোকা মানুষরা এই
কাজগুলো আগ-পিছ
না ভেবেই হুট করেই করে ফেলে।
মৌমিতা অফিসের
কয়েকজনকে ডেকে জিগ্যেস
করলো...
- এখানে ফুল কে রেখেছে?
সবার একই উত্তর তারা জানেনা।
আবির মৌমিতার ডেস্কে ফুল
রেখেই ভয়ে
নীচে চলে এসেছে চায়ের
দোকানে।
আবির ভাবছে কি জানি হয় আজ।
অফিসে ঢুকতেই দেখে আবিরের
ডেস্কের
সামনে মৌমিতা দাঁড়িয়ে আছে।
মৌমিতা জেনে ফেলেছে যে ওটা
আবিরই
করেছে।
কারন মৌমিতাকে দেখলেই আবির
ঘামতে শুরু
করতো আর পকেট থেকে রুমাল বের
করে মুখ মুছতো। ফুল দেবার সময়ও হয়ত
ঘেমেছিলো। কিন্তু
ভুলে রুমালটা সেখানে ফেলে
আসে।
আবির মৌমিতাকে তার ডেস্কের
সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
আবার
ঘামতে শুরু
করে। পকেট থেকে রুমাল বের
করবে দেখে রুমাল
নেই।
মৌমিতা আবিরের রুমালটা বের
করে দেখাতেই
আবির চোখ বড় বড় করে রুমালের
দিকে তাঁকায়।
এবার মৌমিতা আবিরকে প্রশ্ন
করে...
- এতগুলো গালাপ
কেনো রেখেছেন?
- জ্বী মানে..
- কি মানে মানে করছেন?
কেনো রেখেছেন
সেটাত বলবেন?
- হ্যাপি বার্থ ডে।
- তাই বলে তেইশাটা গোলাপ
কেনো?
- আপনার তেইশতম জন্মদিন তাই।
বোকা মানুষটাও যে এরকম
একটা অদ্ভুত কাজ
করতে পারে তা মৌমিতা ধারনা
করতে পেরেছিলো।
সেদিনের সেই
ঘটনা মনে পড়লে আজো অজান্তেই
হেঁসে ফেলে মৌমিতা।
লাঞ্চের টাইম হয়েছে।
মৌমিতা আবিরের
সাথে কথা বলতে চেয়েছে
এটা আবিরের মনে আছে।
তাই সে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ
করে প্রস্তুত
থাকে মৌমিতা তাকে ডাকলেই
সে
দ্রুতগতিতে চলে যাবে।
খয়েরি শাড়িতে যে মৌমিতাকে
সুন্দর
লাগছিলো সেটা সে কিছুতেই
বিশ্বাস
করছিলোনা।
মৌমিতা আর আবির লাঞ্চ
টাইমে অফিসের
পাশের একটা রেষ্টুরেন্টে যায়।
মৌমিতা রেষ্টুরেন্টের টেবিলের
পাশে রাখা চেয়ারটাতে বসতে না
বসতেই
আবিরকে
প্রশ্ন ছুড়ে দেয়..
-
আচ্ছা সত্যি করে একটা কথা বলবেন?
- অবশ্যই।
- আপনি আমাকে পছন্দ করেন?
কথাটা শুনে আবির ঘামছে ত
ঘামছেই।
মনে হয় নার্ভাস লাগছে।
আবিরের অবস্থায় আবিরের
মুখটা লাল হয়ে
আছে। পকেট থেকে রুমাল বের
করে মুখ
মুছে ফেলে আবির।
মৌমিতা আবার প্রশ্ন করলো..
- কি হলো, কিছু বলছেন না যে?
- হ্যাঁ বলবো।
- ত তাড়াতাড়ি বলনে, লাঞ্চের
টাইম শেষ
হয়ে যাচ্ছে।
- হ্যাঁ আমি আপনাকে পছন্দ করি।
অফিসে প্রথম যেদিন দেখেছি,
সেদিন থেকেই
আমার মনের একটা জায়গা আপনি দখল
করে নিয়েছেন।
ভালোবাসাটা পরিপূর্ণ করার
জন্যই এতোটা সময় নেয়া।
মৌমিতা অবাক হয়ে সব
শুনছিলো এতক্ষণ।
এরকম বোকা মানুষের মুখ থেকে হঠাৎ
করে
তার জমানো কথাটা শুনলে অবাক
হবারই
কথা।
সেই দিনের পর...
- মৌমিতা তাড়াতাড়ি নাও
অফিসের লেট
হয়ে যাচ্ছে ত।
- একটু ওয়েট করো প্লীজ। হ্যাঁ এবার
চলো।
- মৌমিতা খয়েরী শাড়ি!!!
- হ্যাঁ। বিবাহ্ বার্ষিকী বলে পড়লাম।
রিকশায়
চড়ে অফিসে দিকে যাচ্ছে ওরা।
পথিমধ্যে আবির অফিসের ব্যাগ
থেকে
একটা গোলাপ বের করে মৌমিতার
চুলে
গুঁজে দেয়।
মৌমিতা অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে
আছে আবিরের দিকে।
নাহ্ এ দৃষ্টি সরিয়ে নেবার নয়।
লেখা - সাঈদ আহমেদ