অনেকক্ষন ধরে উকিলের
চেম্বারে বসে আছি।
কানে হেডফোন লাগিয়ে গান
শুনতে ইচ্ছা হচ্ছে, কিন্তু
না জানি কখন আমার ডাক এসে যায়
সে জন্য গান টাও ঠিকমত
শুনতে পাচ্ছি না।
কিছুদিন আগে নাবিল
ইনবক্সে জোয়েলের # কোথায়
যাবি গানটার ডাউনলোড লিংক
দিয়েছিল। সেই
থেকে মাঝে মাঝেই শুনি। উকিলের
চ্যালা এসে বলল আপু
আপনাকে ডাকে। এরা মুনিবের
চ্যালা,ডানহাত,চামচা হলেও সুন্দর
একটা নাম থাকি। আর উকিলের
চামচাদের কে মুহরি বলে।কিন্তু এই
মুহরির নাম টাও বাজে, মফিজ মুহরি।
ওকে মফিজ ভাই বলে উকিলের
চেম্বারে গেলাম। অবশ্য তার
আগে মফিজ
ভাইকে একটা হাসি উপহার দিলাম।
আমার হাসিটা নাকি তার অনেক
পছন্দ।
উকিল সাহেবের রুমটা বেশ
সাজানো পরিপাটি,
চারিদিকে সেলফ,মাঝখানে একটা বিশাল
ডেক্স।যদিও জহির রায়হান এর মন্তুর মত
করে উকিল চেম্বারের
বর্ণনা দেওয়া যায়। কিন্তু আমার
দিতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
উকিল সাহেবের ডেক্সের
সামনে দাড়ালাম। সাদা-
কালো মোছওয়ালা উকিল তার
নাকের ডগায় থাকা চশমার
আধা ফোকর দিয়ে আমার
দিকে তাকালেন,
বললেন বসো। (ভদ্রতাবোধ
আছে তাহলে)
বসে পরলাম।
--কি সমস্যা?
--
আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসি।
-সেটা ছেলেটাকে বলো!
-3 বছর আগেই বলেছি।
-সে কি মেনে নিয়েছে?
-3.5 বছর আগে।
-তাহলে কি সমস্যা?
-আমরা বিয়ে করতে চাই।
-করে ফেল।
-কিন্তু এখানেই সমস্যা?
-সেটা কি?
-ছেলে তার বাবাকে ভয় পায়।
-তোমার বয়স কত?
-20, আর ছেলের বয়স 24
-তাহলে তোমরা দুজনেই এডাল্ট।
তাহলে কি সমস্যা?
-ছেলে ভয় পায় তার
বাবা পরে যদি কোন সমস্যা করে?
তাই আমি এসেছি আপনার
কাছে সহায়তা চাইতে যেন
পরে কোন সমস্যা না হয়।
-দেখ মেয়ে বাংলাদেশ
সংবিধানেই লেখা আছে যে 18 বছর
হলেই সে মেয়ে/ছেলে সাবালক
বলে গন্য।এসময় তারা তাদের
সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাতে কেউ
বাধা দিতে পারে না।
- কিন্তু এরপর যদি ছেলের বাবা কোন
আইনি ঝামেলা করে?
আঙ্কেল এবার চেয়ার ছেড়ে উঠলেন,
বাম পাশের সেল্ফ থেকে একটা বই
নিয়ে কিছু পাতা উল্টালেন,এর পর
আমার কাছে এসে বললেন,
সেক্ষেত্রে ছেলেকে প্রমান
করতে হবে যে সে যা করেছে তা সাবালকের
অন্তর্ভুক্তি তাহলে পেরেন্টসের
কিছু করার নেই।
--তাহলে আঙ্কেল যদি ওর
বাবা যদি ওকে বাসা থেকে বের
করে দেয়, সকল
সম্পত্তি থেকে ওকে ত্যাজ্য
করে দেয়। তাহলে,
--- আঙ্কেলের মাথায় চুল নেই, তাও
হাতের কলম দিয়ে মাথা চুলকালেন,
তারপর অনেকক্ষন কিছু বই ঘাঁটলেন,
এরপর আমাকে একপালা ল এর রুলস
দ্বারা আমাকে বুঝালেন
যে ছেলে ইচ্ছা করলে মানবাধিকার
খর্ব করার অপচেষ্টার অভিযোগ
করতে পারে তার বাবার নামে।
এবং তার বাবা বাধ্য তার অধিকার
ফিরিয়ে দিতে।
--সব বিষয় দেখে বুঝলাম জয় আমাদের,
প্রেমের জয়।
বললাম, আর কোন বাধা নেই
আমাদের বিয়ের।
-- নাহ, তুমি নিশ্চিন্ত থাকো।
-তাহলে আপনাকে একবার
বাবা বলে ডাকি?
-মানে?
-মানে আমি আপনার
ছেলেকে বিয়ে করতে যাচ্ছি।
আঙ্কেল
হা মেলে রইলেন,ইচ্ছা করছিল
একটা মিষ্টি তার মুখে ঢুকিয়ে দেই।
শুশুড় মশাই বলে কথা.....
জয়িতা
|