সেদিন রেললাইনের উপর বসে
সিগারেট খাচ্ছিলাম একা একা।
প্রায় ৫০মিটারের মতো দুরত্বে একটা
মেয়ে কাঁদছে স্পস্ট
দেখতে পাচ্ছিলাম।
শুক্রবারে কোনো মেয়ের
দিকে দিত্বীয়বার তাকাই না আমি।
তাই আপন মনেই সিগারেট খাচ্ছিলাম।
হঠাৎ ভার্সিটির ট্রেন আসার আওয়াজ
শুনতে পেয়ে ডানে তাকালাম,
দেখলাম মেয়েটা বারবার ফোন
দিচ্ছিলো কেউকে কিন্ত
ফোন ধরছেনা ওপারের মানুষ তাই
মোবাইলটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে কাঁদতে
লাগলো আবার, এবার উঠে সে পাশের
রাস্তায় দাঁড়ালো,
ট্রেনটা কাছাকাছি এসে পড়েছে কিন্ত
মেয়েটার ব্যাগ আর মোবাইল
তুলেনি এখনো!
মেয়েটা জুতা খুলতে চেস্টা করছে,ভাবলাম
ওইপাশে দৌড় দিবে, ট্রেনটা আর
মাত্র ১০মিটার দূরে ঠিক তখনই হাত
পা ছড়িয়ে স্লিপারের উপর
শুয়ে পড়লো মেয়েটা!! কিছু বুঝে উঠার
আগেই ট্রেনের চাপায় মেয়েটার
শরীরের সব অংশ পুতুলের
মতো ছিড়ে টুকরোটুকরো হয়ে গেছে,
এক মুহূর্তের
জন্যে আমি বোবা হয়ে গেলাম
সিগারেট টা মাটিতে পড়ে আছে।
সামনে যেতে যেতেই বহু মানষের
ভীড় জমে গেছে ততোক্ষণে,
আধাঘণ্টার পরে দেখলাম এক
মহিলা চিৎকার করে কাঁদতে
কাঁদতে অজ্ঞান যাচ্ছে, আবার জ্ঞান
ফিরেই নিজের
মাথা নিজে টুকছে মাটিতে।
আজ ৪বছর পর গতকাল শুক্রবার মসজিদের
বাহিরে ফকিরদের
সাড়িতে দেখতে পেলাম সেই
মা'কে। হাত পাতছে সবার
সামনে ক্ষুদার্ত চোখে করুনার প্রাপ্য
হওয়ার আপ্রাণ চেস্টা। পরে এই শুব্ধ
ভাষুক মহিলার মুখে কাহিনী শুনলাম,
মধ্যবিত্ত পরিবার ছিলো তাদের। তার
মেয়ে ভার্সিটিতে
পড়তো, তার বয়-ফ্রেন্ড ছিলো কিরণ,
বর্ষার কাছ থেকে ১লাখ টাকা নেয়
ব্যবসা করার জন্যে আর
পেটে বাচ্চা রেখে চলে যায় ঢাকায়
বিয়ে করার কথা বলে আর
ফিরে না আসায়
বাচ্চা পেটে নিয়েই আত্মহত্যা করে।
মেয়ে মারা যাওয়ায় বাবা পাগল
হয়ে যায় চিকিৎসা করাতে করাতেঘর
বাড়ি সব বিক্রি হয়ে গেছে।
মহিলার কথা শুনে অশ্রুশিক্ত হয়ে
মানিব্যাগে যা ছিলো দিলাম
আফসোস করে, ভুলের কারণে পরিবর্তন
হওয়া ভাগ্যের নির্মম পরিহাস শুনে।
শিক্ষনীয় একটাই কথা, ভালবাসা যখন
অন্ধ করে তোলে তখন শত সুর্যের আলোও
সেই মানুষকে পথ দেখাতে পারেনা।
তাই আবেগ দিয়ে নয় বিবেকের বোঝ
কাম্য।
Mahbub Murshed Nayen
|