জৈব সারের উপকারিতা
এখন কৃষি ক্ষেত্রের প্রেক্ষাপট অনেক বদলেছে।৬০-এর দশকের আগেএদেশে দেশী জাতের ধান আবাদ হতো।তখন যা উৎপাদন ছিলতাতেই আমাদেরচলে যেত।জনসংখ্যা বাড়ছে, খাদ্যের প্রয়োজন বাড়ছে, তাই ৬০-এর দশক থেকেআস্তে আস্তে শুরু হল সেচ আর রাসায়নিক সার ব্যবহারের।
গত ৩০ বছর থেকে পর্যায়ক্রমে একই জমিতে একই ফসলেরচাষ, রাসায়নিক সার ব্যবহার, জৈব সারের ঘাটতি- সব কিছু মিলে মাটি আজ তারউর্বরা শক্তি একেবারেই হারিয়ে ফেলেছে।আমরা উচ্চ ফলনশীল শস্যের চাষ করতে গিয়ে শস্যবেড়ে ওঠার জন্য তার যত্ন নিচ্ছি।খাবার দিচ্ছি এবং পরবর্তীতে তার কাছ থেকে কাঙ্খিত ফলনপাচ্ছি।কিন্তু মাটির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করছিকি?
মাটির খাদ্য হচ্ছে জৈব সার বা জৈব মিশ্রণ।গোবর একটি জনপ্রিয়বহুল প্রচলিত এবং উৎকৃষ্টমানের জৈব সার।জ্বালানি ঘাটতির কারণে মূল্যবান এই সারএখনজ্বালানি কাজে ব্যবহার হয়।ফসল সংগ্রহের পর খড়নাড়া কিংবা মোচা জমিতে রেখেই পুড়িয়ে মাটির সাথে মিশ্রিত দেয়া হত।পরবর্তীতে সেখানথেকে তৈরী হত মাটির খাদ্য।আজ এগুলো সবই ব্যবহার করা হয় অন্য কাজে।তাহলে মাটির খাদ্যেররইল কি? আমরা যদি গত ৩০ বছর ধরে রাসায়নিক সার ব্যবহারের পাশাপাশিজমির জন্য প্রয়েজনীয় পরিমাণজৈব সার ব্যবহারের ধারা অব্যাহত রাখতে পারতাম তবে সম্ভবতবলাযেত যে, আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশের আবাদি জমিগুলো থেকে ফসলউৎপাদনেরমাত্রা বর্তমানের মতোই অব্যঅহত রাখা সম্ভব হবে।কিন্তুএকথা বলার মতো প্রেক্ষাপট আর নেই।বহু দিন ধরেপ্রচেষ্টার পর কৃষি বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বর্তমান সময়ে এসে আমরা খাদ্যেহয়তো স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার পথে- এটি একটি বিরাট সাফল্য। ৫৬ হাজার বর্গমাইলভূমির এই দেশে প্রায় ১৫ কোটি মানুষের খাদ্যের উৎপাদন চাট্টিখানি কথানয়।উৎপাদন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।শস্যেরসাথে মাটির সমন্বয় মোটামুটি ঠিক থাকলেও এর পরথেকে উৎপাদন হবে নিম্নমূখী।ফসলের এই উৎপাদনেরপ্রক্রিয়াশুরু হয়েছিল ২৫-৩০ বছর আগে যে ফলআমরা ভোগ করছি আজ।আজ যে পরিকল্পিত প্রক্রিয়া শুরু হবে সেই ফলাফল আসবে আগামীএক দু'দশক পর।কৃষি ক্ষেত্রের এ জাতীয় পরিবর্তন আসতে ২০-২৫ বছর সময় লেগেযায়।
তথ্য সূত্র: শাইখ সিরাজ রচিত ‘মাটি ও মানুষেরচাষবাস’গ্রন্থ থেকে সংগ্রহীত
|