ইবনে সিনা(Ibn Sina) চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক ইবন সীনা~~Hedaet Forum~~


Email: Password: Forgot Password?   Sign up
Are you Ads here? conduct: +8801913 364186

Forum Home >>> Biography >>> ইবনে সিনা(Ibn Sina) চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক ইবন সীনা

Tamanna
Modarator Team
Total Post: 7639

From:
Registered: 2011-12-11
 

ইবনে সিনা(Ibn Sina)
চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক ইবন সীনা
আবু আলী হোসাইন ইবন সীনা (বুআলী সীনা, ৯৮০ - ১০৩৭) মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সেরা চিকিৎসক, গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক। তাকে সর্ববিদ্যায় পারদর্শী হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। তাকে একইসাথে ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তান এবং রাশিয়ার বিজ্ঞজনেরা তাদের জাতীয় জ্ঞানবীর হিসেবে দাবী করে। মুসলিম বিশ্বে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশী। মধ্যযুগীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভিত রচনায় তার অবদান অনস্বীকার্য। তার মূল অবদান ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের বিশ্বকোষ আল-কানুন ফিত-তীব রচনা করেন যা ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্তও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল প্রতিষ্ঠানসমূহে পাঠ ছিল। আরবিতে ইবন সীনাকে আল-শায়খ আল-রাঈস তথা জ্ঞানীকুল শিরোমণি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ইউরোপে তিনি আভিসিনা (Avicenna) নামে সমধিক পরিচিত, হিব্রু ভাষায় তার নাম Aven Sina।

ইবনে সীনা এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
নাম : আবু আলী হোসাইন ইবন সীনা
অন্যান্য নাম : শারাফ আল মুলক, হুজ্জাত আল হাক, শাইখ আল রাঈস।
জন্ম : আনুমানিক ৯৮০ খ্রিস্টাব্দ / ৩৭০ হিজরী
আফশানা, সামানিদ সাম্রাজ্যের (বর্তমানের উজবেকিস্তান) রাজধানী বুখারার নিকটস্থ।
মৃত্যু : হামাদান, পারস্য (ইরান)
যুগ : মধ্যযুগ (ইসলামী স্বর্ণযুগ)
অঞ্চল পারস্য (ইরান), প্রধানতঃ সামানিদ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ বৃহত্তর খোরাসান।
১৯ বছর ছিলেন বুখারায়, ১৩ বছর কোনিয়ে-উরগেঞ্চ-এ, ইরানের রাই-এ ছিলেন ১ বছর, হামাদানে ছিলেন ৯ বছর, ইসফাহানে ছিলেন ১৩ বছর।
স্কুল : মুসলিম
মূল কর্মক্ষেত্র : অধিবিদ্যা, যুক্তিবিজ্ঞান, নৈতিকতা, চিকিৎসা শাস্ত্র, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, ধর্মতত্ত্ব
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা : ইউরোপের মধ্যযুগীয় শিক্ষায় ইবন সিনা সৃষ্ট উপকরণ বহুল মাত্রায় ব্যবহৃত হয়
জন্ম ও বংশপরিচয়
ইবন সীনা বুখারার (বর্তমান উজবেকিস্তান) অন্তর্গত খার্মাতায়েন জেলার আফসানা নামক স্থানে ৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে (মতান্তরে, আগস্ট মাস) জন্মগ্রহণ করেন। আরবি পঞ্জিকা অনুসারে সালটি ছিল ৩৭০ হিজরী। তার পিতার নাম আবদুল্লাহ এবং মাতার নাম সিতারা। তার মাতৃভাষা ছিল ফারসি। ফারসি ভাষায় তিনি বেশ কিছু কবিতা ও গ্রন্থ রচনা করেন। তবে সমকালীন অন্যান্যদের মত তিনিও আরবি ভাষাকে জ্ঞান প্রকাশের মূল বাহন হিসেবে গ্রহণ করেন। ইবন সীনার পিতা বুখারার সামানীয় সম্রাটের অধীনে একজন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন।
শিক্ষা জীবন
জন্মের পর ইবন সীনা সপরিবারে আফসানাতে বাস করছিলেন। তার দ্বিতীয় ভাইয়ের জন্মের পর আবদুল্লাহ ও সিতারা সবাইকে নিয়ে বুখারায় চলে আসেন এবং তাদের শিক্ষার জন্য যথোপযুক্ত গৃহশিক্ষক নিয়োগ করেন। এখান থেকেই সীনার শিক্ষার সূচনা ঘটে। সব ভাইয়ের মধ্যে সীনা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই বিশেষ মেধার স্বাক্ষর রাখেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে সমগ্র কুরআন মুখস্ত করেন। মুখস্তের পাশাপাশি তিনি সকল সূক্ষ্ণ ও জটিল বিষয় নিয়ে ছোটবেলা থেকে চিন্তা করতেন। এতে তার বাবা-মা ও শিক্ষক সকলেই বিস্ময় প্রকাশ করতেন। বাবা বুআলীকে ইসমাইলী শাস্ত্র বিষয়ে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইবন সীনা ইসমাইলীদের কোন কথাই বিনা যুক্তিতে মেনে নিতেন না। তাদের অনেক বিষয়ই তিনি যুক্তি দিয়ে প্রত্যাখান করেন। মূলত এরা সীনাকে শিক্ষা দেয়ার মত যোগ্য ছিলনা। তাই আবদুল্লাহ পুত্রের জন্য আরও যোগ্য শিক্ষকের খোঁজ করতে থাকেন।

আগে থেকেই আবদুল্লাহ সেখানকার এক মেওয়া বিক্রতার কথা জানতেন। এই বিক্রতা ভারতীয় গনিতশাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শী ছিল। বাবা আবদুল্লাহ সীনাকে এই মেওয়া বিক্রতার কাছে গণিত শিখার ব্যবস্থ করে দেন। মেওয়া বিক্রতা এর আগে কাউকে তার জ্ঞান বিতরণের সুযোগ পায়নি। এই সুযোগে সে সীনাকে সানন্দে শিক্ষা দিতে থাকে এবং সীনার মেধা এতে আরও সহযোগীর ভূমিকা পালন করে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতীয় গণিতের অনেক বিষয় তার আয়ত্তে এসে যায়। এরপর তাকে অধ্যয়ন করতে হয় ইসমাইলী শাস্ত্রের আইন অধ্যায়। এতেও তিনি দক্ষতা অর্জন করেন। এর মাঝে আর একজন যোগ্য শিক্ষকের সন্ধান পান সীনার পিতা। তিনি ছিলেন তৎকালীন অন্যতম জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব আল নাতেলী। নিজ পুত্রকে শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি নাতেলীকে নিজের গৃহে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এই শিক্ষকের কাছে সীনা ফিক্হ, ন্যায়শাস্ত্র, জ্যামিতি এবং জ্যোতিষ শাস্ত্র শিক্ষা করেন। ছাত্রের মেধা দেখে পড়ানোর সময় নাতেলী বিস্মিত হয়ে যেতেন, তার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভ্যাবাচেকা খেতে হত তাকে। বিস্মিত হয়ে তিনি আবদুল্লাহকে বলেছিলেন, \"আপনার ছেলে একদিন দুনিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী হবে। দেখবেন, ওর পড়াশোনায় কোন ব্যাঘাত যেন না ঘটে।

পরবর্তীতে সীনার শিক্ষক হিসেবে আরও দুজন নিযুক্ত হন: ইবরাহিম ও মাহমুদ মসসাহ।এসময় শিক্ষক নাতেলী বুঝতে পারেন সীনাকে বেশী দিন শিক্ষা দেয়ার মত সামর্থ বা জ্ঞান তার নেই। তখন ইবন সীনা শিক্ষার বিষয়ে অনেকটা নিজের উপর নির্ভর করেই চলতে থাকেন। এসময় সম্বন্ধে তিনি তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন:
যে কোন সমস্যার সমাধান ওস্তাদ যেরুপ করতেন আমি তার চেয়ে ভালভাবে করতে পারতাম। তারঁ কাছে জাওয়াহির মানতিক বা তর্কশাস্ত্রের খনি নামক বইটি পড়ে মুখস্থ করার পর বুঝলাম, আমাকে শেখাবার মত কিছু নতুন আর তার কাছে নেই। তখন বইগুলো আর একবার পড়তে শুরু করলাম। ফলে সকল বিষয়ে আমি বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠলাম। ইউক্লিডের জ্যামিতির (দ্য এলিমেন্ট্স) প্রথম কয়েকটি সম্পাদ্যের সমাধানে ওস্তাদের সাহায্য নিয়ে বাকি কটির সমাধান আমি নিজেই করলাম। টলেমির ১৩ খণ্ডের আলমাজেস্ট বইটি শুরু করে সমস্যার সম্মুখীন হলে ওস্তাদ বললেন, \"তুমি নিজে সমাধান করতে চেষ্টা কর, যা ফল দাড়ায় এনে আমাকে দেখাও। আমি বিচার করে রায় দেবো।\" একে একে সব সমস্যার সমাধান করে ওস্তাদের সম্মুখে হাজির করলাম। তিনি দেখে-শুনে বললেন,\"ঠিক হয়েছে, সব কটিই নির্ভুল সমাধান হয়েছে।\" আমি বেশ বুঝতে পারলাম, এ ব্যাপারে ওস্তাদ আমার কাছ থেকে কিছু নতুন তথ্য শিখে নিলেন।


এভাবে নাতেলী বুঝতে পারলেন তার প্রয়োজন শেষ। এরপর তিনি বুখারা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বুআলী নিজেই এবার নিজের শিক্ষক সাজলেন। এসময় চিকিৎসা শাস্ত্র এবং স্রষ্টাতত্ত্ব সম্বন্ধে তার মৌলিক জ্ঞানের বিকাশ ঘটে। এরিস্টটলের দর্শন সম্পূর্ণ ধাতস্থ করেন এ সময়েই। নতুন বই না পেয়ে আগের বইগুলোই আবার পড়তে লাগলেন। তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে লাগল। বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা তার কাছে পড়তে আসত, তরুণ বয়সেই তিনি এবার শিক্ষকতা শুরু করলেন।


বাদশাহের দরবারে গমন ও সরকারি চাকরি
এ সময় বুখারার বাদশাহ নুহ বিন মনসুর এক দুরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত হন। দেশ এবং বিদেশের সকল চিকিৎসক এর চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়। ততদিনে সীনার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায়, বাদশাহের দরবারে তার ডাক পড়ে। তিনি বাদশাহকে সম্পূর্ণ সাড়িয়ে তুলেন। তার খ্যাতি এ সময় দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আরোগ্য লাভের পর বাদশাহ সীনাকে পুরস্কার দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন। এসময় সীনা চাইলে বিপুল সম্পদ ও উচ্চপদ লাভ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি কেবল বাদশাহ্র কাছে শাহী কুতুবখানায় (বাদশাহ্র দরবারের গ্রন্থাগার) প্রবেশ করে পড়াশোনার অনুমতি প্রার্থনা করেন। বাদশাহ তার এ প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। এভাবেই ইবন সিনা শাহী গ্রন্থাগারে প্রবেশের সুযোগ পান। গ্রন্থাগারের ভিতরে যেয়ে অবাক হয়েছিলেন সিনা। কারণ এমন সব বইয়ের সন্ধান তিনি সেখানে পেয়েছিলেন যেগুলো এর আগেও কোনদিন দেখেননি এবং এর পরেও কখনও দেখেননি। প্রাচীন থেকে শুরু করে সকল লেখকদের বইয়ের অমূল্য ভাণ্ডার ছিল এই গ্রন্থাগার। সব লেখকের নাম তাদের রচনাসমূহের বিস্তারিত বর্ণনা তৈরির পর তিনি সেগুলো অধ্যয়ন করতে শুরু করেন। এমনই পাগল হয়ে গিয়েছিলেন যে, নাওয়া-খাওয়ার কথা তার মনেই থাকত না।

১০০১ সালে ইবন সিনার পিতা মৃত্যুবরণ করেন। সুলতান নুহ বিন মনসুরও ততদিনে পরলোকে চলে গেছেন। নুহ বিন মনসুরের উত্তরাধিকারী নতুন সুলতান ইবন সিনাকে তার পিতার স্থলাভিষিক্ত করেন। এভাবে সিনা বুখারা অঞ্চলের শাসনকর্তার অধীনে সরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন শুরু করেন। কিন্তু রাজনীতিতে তিনি ছিলেন নতুন। অভিজ্ঞতার অভাবে কার্য সম্পাদনে তাকে হিমশিম খেতে হয়। কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ট্রান্সঅকসিনিয়ায় বিদ্রোহ দেখা দেয়। খার্মাতায়েনের পূর্বপ্রান্ত দিয়ে ঐতিহাসিক অক্সাস নদী (আমু দরিয়া) প্রবাহিত হয়ে গেছে যা বুখারা এবং তুর্কীস্তানের মধ্যবর্তী সীমারেখা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। ট্রান্সঅকসিনিয়া তথা খার্মাতায়েনের লোকেরা তাই বেশ দুর্ধর্ষ প্রকৃতির ছিল। তাদের বিদ্রোহ দমন ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। ইবন সিনা এই বিদ্রোহ দমনে ব্যর্থ হন এবং এতে সুলতান তার উপর বেশ বিরক্ত হন। আত্মসম্মানবোধ থেকেই ইবন সিনা চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিরুদ্দেশ যাত্রায় বেরিয়ে পড়েন। এই যাত্রায় তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কখনও রাজার হালে থেকেছেন কখনও আবার কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। তবে সকল কিছুর মধ্যেও তার মূল অবলম্বন ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞানের বলেই তিনি সবসময় সম্মানিত হয়েছেন। এর বদৌলতেই চরম দুর্দিনের মধ্যেও আনন্দের দেখা পেয়েছেন।


বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ
ইবন সিনা অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। তার অভিজ্ঞতার ঝুলিও ছিল সমৃদ্ধ। তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ নগরী খোয়ারিজমে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি পণ্ডিত আল বেরুনির সাথে সাক্ষাৎ করেন। আল বেরুনির মূল উৎসাহ ছিল ভারতবর্ষ। কিন্তু ইবন সিনা কখনও ভারত অভিমুখে আসেননি। তিনি যাত্রা করেছিলেন পশ্চিম দিকে। তার মূল উৎসাহও ছিল পশ্চিমের দিকে। এ কারণেই হয়তো তার চিকিৎসাবিজ্ঞান সংক্রান্ত বইগুলো প্রাচ্যের সীমানা ছাড়িয়ে পাশ্চাত্য জগতেও আপন অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিল। খোয়ারিজম থেকে বিদায় নিয়ে তিনি রাজধানী শহর গুরুগঞ্জে উপস্থিত হন। এই শহরে তার জীবনের বেশ কিছু সময় অতিবাহিত করেন। এখানে অবস্থানকালেই চিকিৎসা বিষয়ে তার অমর গ্রন্থ কানুন ফিত্ তিব রচনা করেন। এরপর যান পূর্ব পারস্যের অন্তর্গত খোরাসান শহরে। স্বাধীন জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন সিনা। কিন্তু এসময় গজনীর সুলতান মাহমুদ ইবন সিনার গুণের কথা শুনতে পেরে তাকে তার দরবারে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিকে দিকে দূত প্রেরণ করেন। নিজ দরবার নয় সুলতান মাহমুদের ইচ্ছা ছল তার জামাতা খোয়ারিজম অধিপতির দরবারকে তিনি জ্ঞাণী-গুণী ব্যক্তিদের দ্বারা সুশোভিত করবেন। ইবন সিনাকে তিনি চেয়েছিলেন সভাসদ হিসেবে। কিন্তু সিনা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জর্জন নামক স্থানে পালিয়ে যান। সুলতান মাহমুদ এ খবর জানতে পেরে জর্জনের অধিপতিকে ফরমান পাঠান যেন, ইবন সিনাকে হস্তান্তর করা হয়, যেভাবেই হোক; স্বেচ্ছায় আসতে না চাইলে বন্দী করে। কিন্তু ইবন সিনা এবার জর্জন থেকেও পালিয়ে গিয়ে আবার নিরুদ্দেশ যাত্রা করেন। এবার তার যাত্রার দিক ছিল ইরান বরাবর।

ইরানে গমন ও শেষ জীবন
ইরানে যাওয়ার পথে ইবন সিনা তার সমসাময়ীক কবি ফেরদৌসীর জন্মস্থান বিখ্যাত তুস নগরী পরিদর্শন করেছিলেন। এখান থেকে তিনি ইরানের সুপ্রাচীন শহর হামাদানে গমন করেন। ঐশ্বর্যশালী এবং ঐতিহাসিক এই নগরীটিকে ভাল লেগে গিয়েছিল সিনার। এখানে অনেকদিন ছিলেন। দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। বয়সও হয়েছিল অনেক। তাই তিনি মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি খুঁজছিলেন। হামাদানে তিনি এই প্রশান্তি খুঁজে পান। এখানে তিনি ধীর-স্থার মনে চিন্তা করার সময় সুযোগ লাভ করেন। হামাদেনের সম্রাট তার থাকা খাওয়া ও নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি এখানে চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে স্বাধীন জীবিকা উপার্জন করতেন। এর সাথে তিনি ধ্যান করতেন অধিবিদ্যা, ধর্মতত্ত্ব এবং দর্শনের মৌলিক বিষয়ে। এখানেই তিনি বিখ্যাত দার্শনিক গ্রন্থ কিতাব আল শিফা রচনা করেন। এই বইটি কবি উমর খৈয়ামের খুব প্রিয় ছিল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এটি তার সাথে ছিল বলে কথিত আছে। যাহোক, হামাদানে তিনি অনেক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেণ। সারাদিন পরীশ্রেমের পর রাতে তিনি অভিজাত ব্যক্তিবর্গের সাথে আমোদ-প্রমোদে লিপ্ত হতেন। সুবিশেষ দার্শনিক প্রজ্ঞার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও গম্ভীর মূর্তিতে বসে থাকা তার স্বভাবে ছিলনা। তাই বলে কখনও আবার আমোদ আহ্লাদে একেবারে মজে যেতেননা। নিজের ধীশক্তি সবসময় সক্রিয় রাখতে পারতেন। কখনই বিস্মৃত হতেননা যে, তিনি একজন জ্ঞানপিপাসু এবং জ্ঞান চর্চাই তার মুখ্য কাজ।
ইরানের হামাদানে অবস্থিত ইবন সিনার সমাধিসৌধ

হামাদানের সুলতান অসুস্থ হলে ইবন সিনা তার চিকিৎসা করেন। এতে সম্রাট আরোগ্য লাভ করেন। এই চিকিৎসায় খুশি হয়ে সম্রাট তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু রজানীতিতে তিনি বরাবরের মতই ছিলেন অপরিপক্ক। তাই এই পদপ্রাপ্তি তার জীবনে নতুন বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। তাছাড়া হামাদানের সেনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিদেশী ইবন সিনাকে সহ্য করতে পারছিলেননা। তাদের সাথে ইবন সিনার বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেনাধ্যক্ষ সিনাকে গ্রেফতার করার জন্য সম্রাটের কাছে আবেদন জানাতে থাকেন। সৈন্য বাহিনীর প্রধানের অনুরোধ উপেক্ষা করার সাধ্য সম্রাটের ছিলনা। তাই তিনি ইবন সিনাকে নির্বাসন দণ্ড দিয়ে অন্য এক স্থানে কারাবন্দী করে রাখেন। তা না হলে শত্রুদের হাতে হয়তো তিনি মারা পড়তেন। শত্রুর পাশাপাশি সিনার বন্ধুও ছিল অনেক। তাদের সহায়তায় সিনা এই কারাজীবন থেকে পালিয়ে যে তে সক্ষম হন। হামাদান থেকে পালিয়ে তিনি ইরানের অন্যতম নগরী ইস্পাহানের পথে পা বাড়ান।

ইবন সীনার পলায়নের কিছুদিন পরই ইরানের ইস্পাহান নগরীতে এক ছদ্মবেশী সাধুর আবির্ভাব হয়েছিল। ইস্পাহানের সম্রাট জানতে পারেন যে এই সাধু আসলে ইবন সিনা। তিনি তাকে নিজ দরবারে নিয়ে আসেন এবং রাজসভায় আশ্রয় দান করেন। সিনাকে আশ্রয় দিতে পেরে সম্রাট নিজেও সম্মানিত বোধ করেছিলেন। ইস্পাহানে বেশ কিছুকাল তিনি শান্তিতে দিনাতিপাত করেন। হামাদানের কেউ তাকে এসময় বিরক্ত করত না। এখানে বসেই তিনি তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কিতাব আল ইশারাৎ রচনা করেন। কিন্তু এখানেও বেশিদিন শান্তিতে থাকতে পারেননি সিনা। অচিরেই হামাদান এবং ইস্পাহাসের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায়। ইসপাহানের সম্রাট হমাদানের বিরুদ্ধে অভিযান প্রস্তুত করেন। এসময় সম্রাট ইবন সিনাকে সাথে নেয়ার ইচ্ছ প্রকাশ করেন। চিকিৎসা সেবা প্রদানের কারণেই তাকে নেয়ার ব্যাপারে সম্রাট মনস্থির করেন। নিজে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও সম্রাটের অনুরোধ তিনি প্রত্যাখ্যান করেতে পারেননি। ইস্পাহানের সৈন্যবাহিনীর নাথে হামাদানের পথে রওয়ানা করেন। হামাদানের সাথে সিনার অনেক স্মুতি জড়িত ছিল। আর এখানে এসেই তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার এই অসুখ আর সারেনি। হামাদানের যুদ্ধ শিবিরে অবস্থানকালে ইবন সিনা ১০৩৭ খ্রিস্টাব্দে (৪২৮ হিজরী) মৃত্যুবরণ করেন






 

Tamanna

Modarator Team

Total Post: 7639
From
Registered: 2011-12-11
 

Ibn Sina (Ibn Sina) The father of medicine Ibn Sina Abu Ali ibn Sina (Sina buali, 980 - 1037), one of the best doctors in the Middle East, mathematician, astronomer and philosopher. He is as adept sarbabidyaya. He also Iran, Turkey, Afghanistan and Russia, as the sages of their national jnanabira claims. The greater its influence in the Muslim world. His contribution to science is undeniable that the foundations of medieval writings. His main contribution was the medicine. The classical encyclopaedia al-law phita-tiba wrote in the nineteenth century until the East and West were read from different universities and medical institutions. Sinake Arabic Ibn al-Shaykh al-cum jnanikula Shiromani raisa as is. He abhisina Europe (Avicenna) known as the Hebrew language his name Aven Sina. Introduction of Ibn Sina Name: Abu Ali ibn Sina Other names: sarapha al-Mulk, Hujjat al-Haq, Sheikh Al-raisa. Born around 980 AD / 370 AH Aphasana, the Samanid Empire (now Uzbekistan), near the capital city of Bukhara. Death: Hamadan, Persia (Iran) Period: Middle Ages (the Islamic Golden Age) Region Persia (Iran), mainly Samanid Empire of Greater Khorasan. Bukharaya was 19 years, 13-year-uragenca in koniye, Iran was in Rai 1 year, hamadane was 9 years old, was a 13-year-isaphahane. School: Muslim The workplace: metaphysics, logic, ethics, medicine, physics, mathematics, astronomy, theology Important concepts: European medieval Ibn Sina teaching materials caused the most widely used measure Birth and parentage Ibn Sina Bukhara (now in Uzbekistan) in 980 AD at Afsana kharmatayena in December (or, August) was born. According to the Arabic calendar was the year 370 AH. Abdullah and his father's name, mother's name Sitara. His mother tongue was Persian. He wrote several books of poetry and Persian. However, like all the others, he is the contemporary expression of the knowledge of the Arabic language as an accepted vehicle. Ibn Sina's father was a civil servant under the emperor samaniya Bukhara. Education Ibn Sina was living with his family after the birth of aphasanate. After the birth of her second brother, Abdullah, and Sitara bukharaya came to take part in their education and appointed tutor. From here Sina began teaching. Sina's all in the field of education was signed special merit from the beginning. He memorized the Qur'an at the age of just 10. In addition to aid from an early age, he thought about all the subtle and complex. His parents and teachers were all surprised. Bualike Ismaili tries to attract parents to the Scriptures. But Ibn Sina isamailidera would not accept anything without a reason. He rejected the argument many things with them. They like to teach the sinake was not eligible. So Abdullah's son began to search for more qualified teachers. Abdullah meoya the seller knew of the one before. Indian ganitasastre the seller was especially adept. Abdullah's father was conducting sinake this meoya learn mathematics to the seller. The seller did not get a chance to distribute his knowledge of meoya man. He sinake Sina look forward to this opportunity to teach and talent to play the role of a partner. Within a few days, a lot of Indian mathematics came to his master. He has to study the scriptures of the Ismaili section. He also studied. In the meantime, another teacher found to be the father of Sina. He was one of the most knowledgeable figures in the al-nateli. To teach his son to stay in his house, he gave natelike. The teacher Sina jurisprudence, logic, geometry and learned astrology. Merit students would be surprised to see nateli time teaching, he would have to eat a lot of questions for him to answer the bhyabaceka. Abdullah said he was surprised, \ "One day your son will know one of the best in the world. You will see, it does not mess up his learning. Sina was later appointed as a teacher two: Ibrahim and Mahmud masasahaesamaya nateli can understand in a few days to teach sinake does not have the ability or knowledge. Ibn Sina's based on a lot of the teaching continues. In the meantime, he wrote in his autobiography: Ustad solve any problems that I had as much to do better than he could. Jaoyahira mantiq premise of his days, or after the mine to memorize the book I read, I like to teach something new and do not have to. And once I started reading the books. As a result of all this that I became particularly adept. Euclid's geometry (the elimentsa) solving the first few executory master solution with the help of the rest of the loins, I asked myself. When faced with the problem of the 13-volume book of Ptolemy's Almagest, Master said, \ "You try to fix it, which suggests Show me the results. I will execute judgment. \" Solve all the problems one by one, have appeared before the master. He said when he saw it, \ "All right, all leaders and leaders have the perfect solution. \" I realized from the master, I learned some new information. Thus, the need to understand nateli. Then he left Bukhara. Now buali himself dressed as his teacher. In the meantime, his basic knowledge of medicine and srastatattba developed. Aristotle's philosophy at the time was fully acclimatized. Again and began to read books defined before getting a new book. His reputation began to spread. Students from different countries came to read to him, from a young age she began teaching. King went to the court and the public service Bukhara, Nuh ibn Mansur, the king at the time was suffering from an incurable byadhite. All medical treatment fails and abroad. Sina already outbreak reputation, his fame in the court of King. The king raised the sariye. At the time of his fame spread abroad. After the king had expressed a desire to reward sinake recovery. In the meantime, if you want to Sina could gain wealth and dignity. But the king kutubakhanaya Shahi (the royal library of the court) asks permission to enter the study. He was granted his prayer. Thus Ibn Sina get access to the royal library. Sina was surprised to go inside the library. Look for books that he had never seen that before and after've never met. Starting from the center of the ancient writers, the book was invaluable library. After making a detailed description of all the works of the author's name, he began to study them. That was so crazy, Nawa-eating would remember his words. Ibn Sina's father died in 1001. Sultan Nuh ibn Mansur already gone in the Hereafter. Nuh ibn Mansur ibn Sultan sinake new heir to his father's successor. Sina Bukhara region's official duties under the governor began. But he was new to politics. Performance due to lack of experience, he is immeasurable. Located in the eastern part of the state within a few days transaakasiniyaya rebellion broke out. Kharmatayenera east aksasa the historic River (Amu Darya), which is flowing is identified as the border between Bukhara and turkistanera. So it was quite dangerous as well transaakasiniya kharmatayenera people. Their revolt was very difficult. Ibn Sina failed to quell the revolt, and the Sultan was quite disturbed him. Ibn Sina left the ride out with self-respect was missing. The ride was his diverse experience. In recent months, the king has ever been thrown in jail ever again. Despite everything, however, was his main means of medical science. Because he has always respected this science. By which has seen the worst of joy in times of trouble. Travel in different places Ibn Sina has traveled to many countries. Her bag was a rich experience. Khoyarijame was one of the most prosperous city in the Muslim world. There he met with scholars of Al berunira. Al berunira India was the main inspiration. Ibn Sina did not, but the direction of India. He had traveled to the west. Disclose to encourage the West to its original. As a result of his medical books of the East beyond the Western world had made his position. He came away from the capital city of khoyarijama guruganje. He spent his life in the city for quite some time. Here abasthanakalei treatment regulations Fitr Tib wrote his immortal book. Go to the eastern city of Khorasan in Persia. Sina was to lead an independent life. But this time the quality of Ghazni, Sultan Mahmud Ibn Sina could hear her side of the court to take the side of the envoy sent. The court will not dodge his son-in-khoyarijama ruler, Sultan Mahmud darabarake he would adorned by jnani-talented individuals. Bin sinake he wanted to be a courtier. But Sina fled to a place called George rejected this proposal. Jarjanera ruler Sultan Mahmud heard the news that sent edict, Ibn sinake was handed over, anyway; If you do not go voluntarily into exile. Ibn Sina fled again, but this time George came up missing. Iran, along with the direction of his journey. Return to Iran and end of life Iranian poet Ferdowsi way to Ibn Sina his contemporaries visited the birthplace of the famous city of Tus. From there he went to Iran's ancient city hamadane. It took the city in breast opulent and historic. He was here for a long time. He traveled the country exhausted. Many were young. So he was looking for physical and mental tranquility. Hamadane he found peace. When he thought the place was slow. Hamadenera Emperor had ventilation and safe to eat. He used to earn a living independent of service here. He meditated on metaphysics, theology and philosophy basic. Kitab al-Shifa book where he wrote the famous philosopher. This book is very dear poet Omar Khayyam was. He said it was in the last days there. However, the opportunity to work hamadane he peyechena. Parisremera the day after the night he was involved in pleasure and entertainment elite personalities. Subisesa philosophical wisdom, despite the serious nature of the statue was sitting. So never again got away with having absolutely yetenana ahlade delight. His caliber could always active. Hatenana never forgotten that he is a learner and knowledge carcai his main job. Iran is located in the Ibn Sina Tomb hamadane Hamadanera Sultan Ibn Sina in his treatment of the sick. The emperor was cured. The treatment of the Prime Minister appointed him emperor was happy. But as usual, he was immature rajanitite. Created new embarrassment in his life, so the accession to office. Moreover hamadanera senior army officers and employees of the Department of Foreign bin sinake parachilenana to bear. Their dispute is with the Ibn Sina. Sinake commander arrested in order to appeal to the emperor. It was not possible to ignore the request of the emperor's troops. So he exiled bin sinake other prisoners kept in one place. Otherwise, he may die in the hands of the enemy. Sina had a friend as well as a lot of enemies. Sina their support of this imprisonment was able to run away from that. He escaped from the city of Hamadan in Iran Ispahan step on the way. Ibn Sina fled after a few days in the city of Isfahan in Iran, one of the saint appeared incognito. Ibn Sina St. fact that the emperor can find Ispahan. He brought his court, and the court granted asylum. The emperor himself was honored to be able to give shelter sinake. He had lived in peace for quite some Isfahan. Hamadanera did not bother him at that time. Here, he is the greatest of his life, wrote the book Kitab al isarat. Sina could not live in peace, but here too long. Soon, war broke out between Hamadan and ispahasera. Isapahanera hamadanera campaign against the emperor was ready.